ওসি প্রদীপকে ঠেকাতে ইয়াবা ডনদের নতুন মিশন, ঢাকায় গোপন বৈঠক

জসিম উদ্দিন :

গত কয়েকমাস যাবৎ টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে সরকার ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে অব্যাহত অভিযানের ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সীমান্ত উপজেলার ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।

গত ১৬ ফ্রেব্রুয়ারী দেশে প্রথমবারের মত টেকনাফে ১০২জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর আত্মসমর্পণ করে।

ইয়াবার প্রবেশদ্বার টেকনাফে সর্বাত্মক অভিযানের ফলে এর প্রভাব পড়েছে সারাদেশের ইয়াবা 
সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্ক ও ইয়াবার বাজারে। এ কারণে টেকনাফের বেশিরভাগ চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিরা গা ঢাকা দিয়েছে।

তবে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাও তারা অব্যাহত রেখেছে বলে জানা যায়। একটি সূত্র জানায়, ঢাকায় একটি তারকা মানের হোটেলে টেকনাফের কয়েকজন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে দেশের শীর্ষ ইয়াবা ডনদের একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বৈঠকে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্ট সবার জীবন হুমকির মুখে থাকার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

কক্সবাজারের টেকনাফ চট্রগ্রাম ও ঢাকার ইয়াবা সেন্ডিকেটের প্রতিনিধিগণ ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে সূত্র জানায়। এদের মধ্যে কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদও ছিলেন বলে দাবি করা হয় সূত্রটির পক্ষ থেকে।

তবে হোটেলের নাম বা বৈঠকের দিন-তারিখ জানাতে পারেনি সূত্রটি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক সূত্র জানায়, টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে বন্ধ করার লক্ষ্যে টেকনাফের চিহ্নিত কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী বিপুল অংকের টাকা একটি সিন্ডিকেট জমা করেছেন। ওই সিন্ডিকেট দেশে-বিদেশের অন্তত ১০০জন কারবারি জড়িত আছে বলে জানা যায়। সূত্রের দাবি, টেকনাফে মালয়েশিয়া পালাতক ইয়াবা ডনরা গত কয়েক মাস এক সাথে বসবাস করছেন এবং দেশে-বিদেশে ইয়াবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যোগাযোগ রেখে টেকনাফে তাদের ভেঙ্গে পড়া নেটওয়ার্ক শক্ত করা চেষ্ট চালাচ্ছেন।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, পুলিশের বদলী স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া। তবে, যতদিন আমি টেকনাফে আছি মাদকের বিরুদ্ধে আরো ভয়াবহ অভিযান হবে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন বলেন, ঢাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গোপন বৈঠকের খবর আপাতত আমাদের কাছে নাই। তবে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোঁজ খবর নেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, তারা যতই বৈঠক করুক না কেন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের রক্ষা নাই।

উল্লেখ্য, বেসরকারি টিভি চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সাংবাদিক এম এম আকরাম হোসাইনের মধ্যস্থতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ইয়াবা ও অস্ত্র জমা দিয়ে গত ১৬ ফ্রেব্রুয়ারী টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে আনুষ্ঠানিকভঅবে দেশে প্রথম বারের মত ১০২জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন।